‘নতুনদের নিয়েই কাজে বেশি আগ্রহী’ : আসাদুজ্জামান আসাদ

ফ্যাশন, বিনোদন কিংবা ক্রীড়াবিটে ফটো সাংবাদিকতায় অত্যন্ত পরিচিত মুখ আসাদুজ্জামান আসাদ। ক্যারিয়ারের দীর্ঘ ২২ বছর পর নতুন অবতারে হাজির হয়েছেন তিনি। ঈদুল আযহায় চ্যানেল নাইন টেলিভিশনে প্রচারিত তার নির্মিত “তুমি আমার মনের মানুষ” ৬ পর্বের ধারাবাহিক নাটকটি বেশ দর্শক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সম্প্রতি নিজের মিডিয়া ক্যারিয়ার ও মিডিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ট্রেন্ডিরিডারডটকমের তানজিল আহমেদ জনি এর সঙ্গে এক আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন তিনি

ট্রেন্ডিরিডারডটকম: ফটো সাংবাদিকতা থেকে হঠাৎ করে নির্মাণে কেন ঝুকলেন?

আসাদুজ্জামান আসাদ: আসলে হঠাৎ করেই নির্মাণে ঝুকে যাওয়ার বিষয়টি নয়। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে আমি মিডিয়ায় কাজ করছি। এখানে একটু বলে নেওয়া উচিত নাটক, টেলিফিল্ম, সিনেমা, মিউজিক ভিডিও, ওটিটি প্লাটফর্ম কিংবা সংবাদপত্রের জন্য কাজ করলেও সবাই একনামে এগুলোকে মিডিয়া নামেই আখ্যায়িত করে। ফলে এগুলোর যে কোন একটিতে একজন মানুষ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করলে তার কাজের প্রতি ও একই সঙ্গে মিডিয়ায় ভালো কিছু করার প্রতি দায়বদ্ধতা বেড়ে যায়।  

এখানে উদাহরণ টেনে বলা যায়, অভিনয় করার পাশাপাশি অনেকে নাটক কিংবা টেলিফিল্মের জন্য গল্প লিখছেন, কনটেন্ট নির্মাণ করছেন আবার সাংবাদিকতা করার পাশাপাশিও কেউ গান লিখছেন, কেউ কবিতা লিখছেন, কেউ নাটক, টেলিফিল্ম কিংবা সিনেমার চিত্রনাট্যও লিখছেন। যেহেতু আমি একজন পেশাদার ফটো সাংবাদিক এবং ফ্যাশন ফটোগ্রাফি করতে গিয়ে ফ্রেশার থেকে তারকা মডেল, অভিনেত্রী, অভিনেতা সবার সঙ্গে একটা ভালো সখ্যতা গড়ে উঠেছে এবং আমার সঙ্গে কাজ করা ফ্রেশারদের অনেকেই এখন বিজ্ঞাপন ও টেলিভিশন মিডিয়ায় সুপরিচিত মুখ, তাই আমারও মনে হলো এখুনি সময় আমারও নির্মাণে নিয়মিত হওয়া। আর এদেরকে নিয়ে রুচিশীল দর্শকদের জন্য ভালো কিছু নির্মাণ করা। তবে এটা ঠিক নির্মাতা হিসেবে পথচলা অল্প দিনের হলেও প্রস্তুতির পর্বটা শুরু হয়েছিলো বহু বছর আগে থেকেই।

ট্রেন্ডিরিডারডটকম: বিজ্ঞাপন, নাটক ও সিনেমা এই তিন সেক্টরের মধ্যে একজন নির্মাতা হিসেবে আপনি কোন সেক্টরে কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন?

আসাদুজ্জামান আসাদ: সকল নির্মাতার একটা স্বপ্ন থাকে তিনি একটি হলেও চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন, ঠিক তেমনি আমারও সবকিছু অনুকুলে থাকলে একটি হলেও চলচ্চিত্র নির্মাণ করার পরিকল্পনা আছে। বলতে গেলে বর্তমানে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য যে প্রস্তুতি প্রয়োজন আমি সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ট্রেন্ডিরিডারডটকম: টেলিভিশন চ্যানেল, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কিংবা এজেন্সি এগুলোর মধ্যে কার সঙ্গে একজন নির্মাতার সরাসরি কাজ করা উচিত?

আসাদুজ্জামান আসাদ: একজন নির্মাতার সরাসরি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে কাজ করা উচিত। একটি সময় এমনটিই ছিলো। কিন্তু দিন যেহেতু বদলেছে তাই বর্তমানে ব্যবসায়িক কারণে প্রযোজনার জায়গাটিতে বিভিন্ন এজেন্সি চলে আসছে। তবে এক্ষেত্রে বলতে চাই, একজন রুচিশীল নির্মাতার সকল চাহিদা যদি কোনো এজেন্সি তার নির্মাণের ক্ষেত্রে পূরণ করতে পারে তাহলে সেই নির্মাতার জন্য সেই এজেন্সিই ভালো বিনিয়োগকারী। অন্যদিকে যদি কোন সৌখিন কিংবা পেশাদার প্রযোজক বা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কোনো নির্মাতার চাহিদা পূরণ করতে পারে তাহলে সেই নির্মাতার তার সঙ্গে কাজ করাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর যদি কোনো টেলিভিশন চ্যানেল থেকে একজন নির্মাতা তার কাক্ষিত সব সুযোগ সুবিধা তার নির্মাণের জন্য পায় সেক্ষেত্রে ঐটাই বেষ্ট। তবে সৌখিন প্রযোজক, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, এজেন্সি কিংবা টেলিভিশন চ্যানেল কার সঙ্গে একজন নির্মাতার কাজ করা উচিত এক্ষেত্রে কোন স্বীকৃত সূত্র নেই।

ট্রেন্ডিরিডারডটকম: আপনি কি তারকা নির্ভর নাকি তারকা তৈরির নির্মাতা হতে চান?

আসাদুজ্জামান আসাদ: তারকা তৈরির বিষয়টি একজন নির্মাতার টিমের উপর নির্ভর করে। কিন্তু কোথাও যেন আমাদের সমন্বয়ের একটা ঘাটতি রয়েছে। বতর্মানে আমি একটি স্মার্ট টিম তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার নির্মিত প্রথম প্রোডাকসন থেকেই আমি অভিজ্ঞদের পাশাপাশি নতুনদের প্রতিনিয়ত সুযোগ দিয়ে যাচ্ছি। যদি আমার কাজের ক্ষেত্রে পরিবেশ, পরিস্থিতি আমার অনুকুলে থাকে তাহলে আমি নতুনদের নিয়েই খুব ভালোমানের কাজ সবাইকে উপহার দিতে পারবো। মূলত আমি নতুনদের নিয়েই কাজে বেশি আগ্রহী।

ট্রেন্ডিরিডারডটকম: মিউজিক ভিডিও কিংবা নাটক নির্মাণের ক্ষেত্রে মিডিয়ায় প্রতিনিয়ত নির্মাতার সংখ্যা বেড়েই চলছে এর ফলে মিডিয়া কি লাভবান হচ্ছে নাকি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে?

আসাদুজ্জামান আসাদ: ভালো কাজের জন্য যেমনি একদিকে অনেক মেধাবী নির্মাতারা তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু পাচ্ছে না আবার অন্যদিকে কখনো কখনো একটি ভালো কনটেন্ট নির্মাণের পরেও সেটা বিভিন্ন সময়ে বির্তকে জড়িয়ে যাচ্ছে, সেই দৃষ্টিকোন থেকে নির্মাণে যে কোন ব্যক্তির সম্পৃক্ততাকে আমি নেতিবাচক হিসেবে দেখি না। তবে যদি কেউ কম বাজেটে দশ বা বিশটি গড়পড়তা কনটেন্ট নির্মাণের পরে ভালো বাজেট পাওয়ার পরেও মানসম্মত কনটেন্ট নির্মাণ না করে সেই বিষয়টিকে আমি মোটেও সমর্থন করি না। বাজেট ভালো হলে অবশ্যই সকলশ্রেনীর দর্শকের কাছে একটি ভালো বার্তা পৌছে দিতে সক্ষম এমন কনটেন্ট নির্মাণ করাই উচিত বলে আমি মনে করি।

ট্রেন্ডিরিডারডটকম: এ সময়ের ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাই

আসাদুজ্জামান আসাদ: সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরে ৮টি খন্ড ও ধারাবাহিক নাটক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

ছবি সংগ্রহ: আসাদুজ্জামান আসাদের ফেইসবুক

তানজিল আহমেদ জনি/ বিনোদন/ ২ সেপ্টেম্বর ২০২১

You may also like...