‘আমি কিছুটা সিন্ডিকেট মেইনটেইন করি’ : আদিত্য রুপু
কবি, গীতিকার কিংবা বিনোদন সাংবাদিকতায় সৃষ্টিশীল লেখনীর মাধ্যমে সকল শ্রেণির পাঠক ও শ্রোতার হৃদয় জয় করেছেন আদিত্য রুপু। এছাড়াও মিউজিক ভিডিও নির্মাণের মাধ্যমে সকল শ্রেণির নেটিজেনদের নজরও কেড়েছেন বেশ। সম্প্রতি নিজের মিডিয়া ক্যারিয়ার ও মিডিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ট্রেন্ডিরিডারডটকমের তানজিল আহমেদ জনি এর সঙ্গে এক আড্ডায় বেশ খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: কবি, গীতিকার ও বিনোদন সাংবাদিকতার পাঠ চুকিয়ে কেন হঠাৎ করে নির্মাণের যাত্রা শুরু করলেন?
আদিত্য রুপু: লেখালেখি দিয়েই আমার শুরু। লেখালেখির সুবাদে সাহিত্যের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। কিন্তু লেখালেখি করতে গিয়ে আমি দেখলাম যে, আমাদের দেশে লেখালেখিটা পেশা হিসেবে নেওয়া যায় না। লেখকদেরকে আসলে এই সমাজ সত্যিকার অর্থে কি ঐ অর্থে মূল্যায়নও করে না। সেই কারণেই আমি কিছুদিনের জন্য পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকে বেছে নিয়েছিলাম। বিনোদন সাংবাদিকতার পাশাপাশি আমার লেখালেখিও তখন চলছিলো। বিনোদন সাংবাদিকতা করার সুবাদে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন তারকাদের সঙ্গে আমার বেশ ভালো সখ্যতা গড়ে উঠে। এর মধ্যে আমার গান লেখার যাত্রাটাও শুরু হয়। এভাবে এক পর্যায়ে আমি নির্মাণেও পথচলা শুরু করি। তবে নির্মাণের বিষয়টি মোটেই হটাৎ করে হয়নি।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: বিনোদন সাংবাদিকতা করার সুবাদে আপনি কি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন?
আদিত্য রুপু: আমি যেহেতু বিনোদন সাংবাদিকতায় ছিলাম সেহেতু সবার এমনটি মনেই হতে পারে। আমার সঙ্গে হয়ত অনেক তারকার খুব ভালো পরিচয় আছে কিংবা খুব ভালো বন্ধুত্ব আছে, সেই জায়গা থেকে হয়ত আমি সবসময় বিশেষ কিছু সহযোগিতা পাবো। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে একটি মিউজিক ভিডিও কিংবা নাটক নির্মাণের সময় সেই কনটেন্টের জন্য যেমন ধরনের অভিনয়শিল্পীকে কাস্টিংয়ের জন্য প্রয়োজন তেমন ধরনের অভিনয়শিল্পীকেই কাস্টিং করতে হয়। এক্ষেত্রে আমি যাকে নিয়ে কাজ করছি তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। মূলত নিজের মেধা, মেধার প্রয়োগ, সকলের সঙ্গে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কৌশলগুলো রক্ষা করে চলার বিষয়গুলোরই মূল্যায়ন হয়। এখানে বিশেষ কোনো সু্বিধা পাওয়ার কোনো বিষয় নেই।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: মিডিয়ায় কাজের ক্ষেত্রে আপনি কি কোনো সিন্ডিকেট মেইনটেইন করেন নাকি একলা চলো নীতিতে বিশ্বাসী একজন যোদ্ধা?
আদিত্য রুপু: হ্যা, আমি কিছুটা সিন্ডিকেট মেইনটেইন করি, তবে সেটা হচ্ছে শুধুমাত্র মায়া, মমতা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বন্ধনের সিন্ডিকেট। আমাদের মিডিয়ায় কাজ করা অগ্রজ থেকে নবীন, অভিজ্ঞ থেকে নবাগত হিসেবে কাজ শুরু করেছে এমন সৃষ্টিশীল মানুষের সঙ্গেও আমার বেশ ভালো যোগাযোগ রয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানে সবাই কমবেশি ভালো মানের কনটেন্ট নির্মাণ করছে। তাই ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করতে হলে অবশ্যই একজনকে যোদ্ধা হতে হবে। যুদ্ধ করা ছাড়া আমাদের বিনোদন শিল্পে ভালোমানের কোন কিছু অর্জন করা প্রায় অসম্ভব।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: কবি, গীতিকার, সাংবাদিক ও নির্মাতা এই চারটির মধ্যে কোন ক্ষেত্রে কাজ করে আপনি নিজেকে খুঁজে পান?
আদিত্য রুপু: মূলত আমি লেখালেখিতেই নিজেকে সবচেয়ে বেশি খুঁজে পাই। কারণ একটা ভাবনা কিংবা একটা ভাব লেখতে আমার শুধু একটি কাগজের পৃষ্ঠা ও একটি কলমের প্রয়োজন। কিন্তু অন্যদিকে নির্মাণের ক্ষেত্রে আমার গল্পের প্রয়োজনমাফিক অভিনয়শিল্পী লাগবে, শুটিং ইউনিট লাগবে, ক্যামেরা লাগবে, প্রি প্রোডাকসন থেকে শুরু করে পোষ্ট প্রোডাকসন পর্যন্ত সবকিছুই প্রয়োজন। কিন্তু লেখার জন্য আমার তেমন কিছুই লাগে না। এক্ষেত্রে আমি একলাই লেখতে পারি, সঙ্গে কাউকে প্রয়োজন হয় না। তাই লেখালেখির জায়গাটায় সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করি। তবে আমার প্রতিটি সৃষ্টিশীল কাজের প্রতি যে আমার ভালোবাসা আছে, তা আমার রুচিশীল পাঠক, শ্রোতা ও দর্শকরা যেনো বুঝতে পারেন সেটা আমি সবসময়ই চাই।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: এখন তো পুরোদস্তুর কনটেন্ট নির্মাণে ব্যস্ত সেক্ষেত্রে সাংবাদিকতায় কি আর কখনোই পাবো না?
আদিত্য রুপু: নির্মাণের পাশাপাশি আমার লেখালেখি নিয়মিতেই চলে। তবে কোন ভালোমানের পত্রিকায় যদি ভালো পদে একজন সাংবাদিক হিসেবে এক্সক্লুসিভ কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাই, সেক্ষেত্রে আমি আবারো সাংবাদিকতা পেশায় যোগও দিতে পারি।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: এ সময়ের ব্যস্ততা সম্পর্কে জানতে চাই?
আদিত্য রুপু: সম্প্রতি একটি নাটকের পোষ্ট প্রোডাকসনের কাজ শেষ করলাম।আর একটি স্বনামধন্য ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বেশ কয়েকটি কনটেন্ট নিয়ে গবেষণার কাজ চলছে। অন্যদিকে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরেই আমার বেশকিছু নাটক ও মিউজিক ভিডিও মুক্তি পাবে, বর্তমানে সেগুলোর কাজও চলছে।
ছবি সংগ্রহ: টুইটার
তানজিল আহমেদ জনি / বিনোদন / ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১