‘প্রকৃত শিল্পী তৈরির কারিগর হতে চাই’: সজীব খান
সম্প্রতি অর্ন্তজালে প্রচারিত ‘ভাড়াটে বয়ফ্রেন্ড’ নাটকটি ইতোমধ্যে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। নাটকটি নির্মাণ করেছেন তরুন নির্মাতা সজীব খান।
রবিবার দুপুরে এই নাটকটি নির্মাণের প্রসঙ্গ ছাড়াও নিজের ক্যারিয়ারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ট্রেন্ডিরিডারডটকমের ইনফ্লুয়েন্সার তানজিল আহমেদ জনি এর সঙ্গে মুঠোফোনে এক আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন হালের এই তরুণ নির্মাতা।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: সম্প্রতি প্রচারিত ‘ভাড়াটে বয়ফ্রেন্ড’ নাটকের কনসেপ্টে কাজ করার ইচ্ছে কেন হলো?
সজীব খান: বর্তমান প্রজন্মের একটা বড় সংখ্যাক ছেলে মেয়েরা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে প্রেমের সম্পর্কে বিচ্ছেদের কারণে একটা দীর্ঘ সময় হতাশায় ভুগে। যার প্রভাব তার পড়াশুনা, কর্মস্থল ছাড়াও তার যাপিত জীবনের বিভিন্ন সেক্টরে পড়ে। ফলে একটা সময় তার চারিপাশের সম্পর্কগুলো কিংবা বন্ধনগুলো তার নিজের অজান্তেই দূরে সরে যায়। তখনই তিনি সেই একাকীত্বের জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য হয় আত্নহত্যার পথ বেছে নেন কিংবা মনের কষ্টগুলো ভূলে থাকার জন্য নেশার জগতকে বেছে নেন কিংবা অন্যান্য খারাপ কাজগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সেই খারাপ সময়টায় যদি একজন মানুষ তার পাশে থাকে, তার মনের কষ্টগুলো শুনে তাহলে একাকীত্বে কিংবা বিষন্নতায় ভুগতে থাকা মানুষটি আর আত্নহত্যার পথ বেছে নিবে না কিংবা নেশার জগতেও নিজেকে জড়াবে না। আমি মূলত সেই বার্তাটাই কৌতুকের ছলে বুঝানোর জন্য এই নাটকটি নির্মাণ করেছি।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: তরুণ নির্মাতা হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি কেমন হচ্ছেন?
সজীব খান: ভালো কাজের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সব সময়ই ছিলো, আছে এবং আগামীতেও থাকবে। আর বিশেষ করে মিডিয়ার কাজের ক্ষেত্রে নতুন পুরাতন সবাইকে কাজের ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। আমার ক্ষেত্রেও এর কোনো ব্যতিক্রম ঘটে নাই। তবে এতকিছুর মধ্যেও তখনই আশার আলো দেখতে পাই, যখন দেখি আমার প্রতিটি কাজের সময় আমার আশেপাশের মানুষগুলো আমার প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেন, আমাকে অনুপ্রাণিত করেন। তবে আমি বিশ্বাস করি, যদি আমার ভেতর ভালো কিছু করার প্রতিভা থাকে তাহলে আমাকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। বলা যায়, নিজের জায়গা নিজেকেই তৈরী করে নিতে হচ্ছে।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: টিকটক তারকা কিংবা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সুপরিচিত মুখদের নিয়ে কনটেন্ট নির্মাণকে আপনি নিজে একজন তরুন নির্মাতা হিসেবে কিভাবে দেখেন?
সজীব খান: আমাদের দেশে নতুন শিল্পী তৈরীর প্ল্যাটফর্ম অনেক কম। যে কেউ চাইলেই আজকে নিজেকে সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারে না। সেক্ষেত্রে আমার অবস্থান হচ্ছে টিকটক বা অন্যান্য যেসব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো আছে সেখানে যদি কেউ তার প্রতিভা নিজের যোগ্যতায় সবার সামনে তুলে ধরতে পারে সেটাকে বাধাগ্রস্থ না করে আমাদের সেটাকে খোলা মনে গ্রহণ করা উচিৎ এবং সেই মানুষটাকে অনুপ্রাণিত করা উচিত। ভালো খারাপ সব জায়গায়তেই ছিলো, আছে ও থাকবেই। এটাকে নিয়েই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। টিকটক বা অন্যান্য কোনো মাধ্যম থেকে এসে যদি কেউ মূল ধারার মিডিয়ায় ভালো করতে পারে তাহলে তাকে গ্রহণ করে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে আমার ব্যক্তিগত মতামত।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: আপনি কি তারকা নির্ভর নাকি তারকা তৈরির নির্মাতা হতে চান?
সজীব খান: অবশ্যই তারকা তৈরীর নির্মাতা হতে চাই। একজন নির্মাতা হিসেবে এটা আমার জন্য গর্বের। আমি চাই কারো ভিতরে লুকিয়ে থাকা সুপ্ত প্রতিভাকে সকলের সামনে উপস্থাপন করে সেই মানুষটাকে সকলের সামনে সম্মানিত করতে। মূলত আমি প্রকৃত শিল্পী তৈরির কারিগর হতে চাই। আর যখন আমি এটা আমি করতে পারবো তখনই মনে হবে আমি জীবনে কিছু অর্জন করলাম।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: সাধারণত কোন ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
সজীব খান: আমার কাছে এটার ব্যাখ্যাটা হচ্ছে, আমাকে প্রয়োজনে যেটা বানাতে হচ্ছে তার সাথেই আমাকে মানিয়ে নিতে হবে। নির্মাতা হিসেবে এটা বলা ঠিক হবে না, আমি কোন ধরণের গল্প বানাতে স্বাচ্ছন্দবোধ করি, বরঞ্চ এটা বলতে পারি আমি গল্প আর চিত্রনাট্য অনুযায়ী সবসময় নিজেকে ভাঙার চেষ্টা করি। সেটা অ্যাকশনধর্মী হোক, থ্রিলারধর্মী হোক, ট্রাজেডিধর্মী হোক বা রোমান্টিক কমেডিধর্মী গল্প হোক। তবে এমন কোনো গল্পে কাজ করবো না, যেটা আমার সমাজের পারস্পরিক বন্ধনগুলোকে ভেঙ্গে দেয়।
ট্রেন্ডিরিডারডটকম: আপনার আপকামিং প্রজেক্ট সম্পর্কে কিছু বলুন…
সজীব খান: আসছে ঈদে কয়েকটি কাজের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে শেষ করে এখন শুধু শুটিংয়ের অপেক্ষায় আছি। ‘ভাড়াটে বয়ফ্রেন্ড’ নাটকটির দ্বিতীয় কিস্তি নিয়েও পরিকল্পনা শেষ হয়েছে। অন্যদিকে বেশ কিছু একক নাটকের কাজ চলছে। এছাড়াও তিনটা ওয়েব কন্টেন্টের সম্পাদনার কাজ চলছে। যেগুলো ঈদের আগে ও ঈদের সময়ে প্রচারিত হবে।
ছবি: ফেইসবুক
তানজিল আহমেদ জনি/ জন/ বিনোদন/ ৪ এপ্রিল ২০২২